ঢাবি ভর্তি পরীক্ষা সংক্রান্ত বিস্তারিত

ঢাবি ভর্তি পরীক্ষা সংক্রান্ত বিস্তারিত। 
HSC batch 2018 এবং বিশেষ করে HSC 2019 Batch এর জন্য এই পোস্টটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট ৫ টি ইউনিটে পরীক্ষা হয়। ক ইউনিট, খ ইউনিট, গ ইউনিট, ঘ ইউনিট ও চ ইউনিট। এছাড়াও IBA এর পরীক্ষা হয় যেটা আলাদা কোনো ইউনিট না।

ক ইউনিটে পরীক্ষা দেয় বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা
খ ইউনিটে পরীক্ষা দেয় মানবক বিভাগের শিক্ষার্থীরা
গ ইউনিটে পরীক্ষা দেয় ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থীরা
ঘ ইউনিট হচ্ছে বিভাগ পরিবর্তনের ইউনিট। সবাই পরীক্ষা দিতে পারে। 
চ ইউনিটে সবাই পরীক্ষা দিতে পারে। 
IBA তেও সবাই পরীক্ষা দিতে পারে।

ক, খ, গ ও ঘ ইউনিটে HSC আর SSC এর GPA  এর ওপরে ৮০ মার্ক থাকবে আর পরীক্ষা হবে ১২০ মার্কের। মোট ২০০ মার্ক। ৮০ মার্কের মধ্যে ৫০ মার্কই থাকবে HSC এর GPA এর ওপরে। GPA 5 পেলে (৫*১০) = ৫০ পাওয়া যাবে ৫০ এর মধ্যেই। GPA যা হবে তাকে ১০ দিয়ে গুণ করলে যতো মার্ক আসবে সেটাই। আর SSC এর GPA এর ওপরে থাকবে ৩০ মার্ক। SSC তে GPA 5 পেলে (৫*৬) = ৩০ পাওয়া যাবে ৩০ এর মধ্যে। অর্থাৎ GPA যতো হবে তাকে ৬ দিয়ে গুণ করলে যে মার্ক পাওয়া যাবে সেটাই।

A Unit: এই ইউনিট টি তে শুধুমাত্র বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিবে। এই ইউনিটে চান্স পেলে তারা বিজ্ঞান বিভাগের কোনো একটি সাব্জেক্ট নিয়ে BSc ( Bachelor of Science) পড়ার সুযোগ পাবে। এই ইউনিটে মোট ২৯ টি ডিপার্টমেন্টে মোট সিটের সংখ্যা ১৭৪০ টি।  পরীক্ষার  সময় ১  ঘন্টা ৩০ মিনিট।  সর্বমোট ১২০টি  প্রশ্নের পূর্ণমান ১২০ নম্বর। প্রতিটি ১ নম্বর করে। প্রত্যেক প্রাথীর্কে পদার্থবিজ্ঞান ও রসায়ন সহ সর্বমোট  ৪টি বিষয়ের  প্রশ্নের  উত্তর  করতে হবে।  প্রতিটি বিষয়ের মোট নম্বর ৩০। প্রতিটি  ভুল উত্তরের  জন্য  ০.২৫  নম্বর  কাটা  যাবে। যারা এইচ এস সি তে পদার্থ, রসায়ন, জীববিজ্ঞান ও গণিত পড়েছে তাদেরকে এই ৪ টি বিষয়ে পরীক্ষা দিতে হবে। কেউ যদি ইচ্ছা করে, তাহলে উপরোক্ত সাব্জেক্টগুলোর মধ্যে যেটি ৪র্থ বিষয় থাকবে সেটি বাদ দিয়ে বাংলা অথবা ইংরেজি এর উত্তর করে ৪ টি বিষয় পূরণ করতে পারবে। আর যাদের উপরের চারটার মধ্যে একটি বা দুইটি বিষয় এইচ এস সি তে নাই তারা সেই একটি বা দুইটি সাব্জেক্ট বাদ দিয়ে বাংলা অথবা ইংরেজি পূরণ করবে। যদি একটি বিষয় না থেকে থাকে তাহলে শুধু বাংলা অথবা ইংরেজি এর মধ্যে যেকোনো একটি পূরণ করলেই হবে। আর যাদের দুইটা সাব্জেক্ট নেই, তাদেরকে বাংলা ও ইংরেজি দুইটিই পূরণ করতে হবে।

B Unit: এই ইউনিটে শুধুমাত্র মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিতে পারবে। এই ইউনিটে চান্স পেলে তারা শুধু মানবিক বিভাগের কোনো একটি বিষয়ের ওপরে অনার্স করতে পারবে। এই ইউনিটের আসন সংখ্যা ২,৩৬৩ টি। পরীক্ষা হবে ১ ঘন্টার। প্রশ্ন থাকবে ১০০ টি। প্রতিটি প্রশ্নের মান থাকবে ১.২ করে। ভুল উত্তরের জন্য কাটা যাবে ০.২৫ মার্ক করে।  অর্থাৎ মোট ১২০ মার্কের পরীক্ষা হবে। যার মধ্যে বাংলা ২৫ টি প্রশ্নের জন্য ৩০ মার্ক (প্রতিটি ১.২ মার্ক করে), ইংরেজি ২৫ টি প্রশ্নের জন্য ৩০ ও সাধারণ জ্ঞান ৫০ টি প্রশ্নের জন্য থাকবে ৬০ মার্ক থাকবে। পরীক্ষায় পাশ করতে হলে বাংলায় ও ইংরেজিতে কমপক্ষে ৮ করে ও সাধারণ জ্ঞানে ১৭ মার্ক পাওয়া লাগবে এবং সর্বমোট কমপক্ষে ৪৮ মার্ক পাওয়া লাগবে। অন্যথায় ফেল বলে গণ্য হবে। চান্স পাওয়ার পরে আলাদা সাক্ষাতকার নেওয়ার মাধ্যমে বিষয় মনোনয়ন দেওয়া হবে।

C Unit: এই ইউনিটে শুধুমাত্র ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিতে পারবে। এই ইউনিটে চান্স পেলে তারা শুধু ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের কোনো একটি বিষয়ের ওপরে বিবিএ করতে পারবে। এই ইউনিটের আসন সংখ্যা ১২৫০ টি। পরীক্ষা হবে ১ ঘন্টার। প্রশ্ন থাকবে ১০০ টি। প্রতিটি প্রশ্নের মান থাকবে ১.২ করে। অর্থাৎ মোট ১২০ মার্কের পরীক্ষা হবে। যার মধ্যে বাংলা ২০ টি প্রশ্নের জন্য ২৪  মার্ক (প্রতিটি ১.২ মার্ক করে), ইংরেজি ২০ টি প্রশ্নের জন্য ২৪, হিসাববিজ্ঞান ২০ টি প্রশ্নের জন্য ২৪, ম্যানেজমেন্ট ২০ টি প্রশ্নের জন্য ২৪ ও ফিন্যান্স/মার্কেটিং এর ২০ টি প্রশ্নের জন্য ২৪ মার্ক থাকবে। প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য কাটা যাবে .২৪ মার্ক। প্রতিটি পরীক্ষায় পাশ করতে হলে ইংরেজিতে কমপক্ষে ১০ মার্ক এবং সর্বমোট কমপক্ষে ৪৮ মার্ক পাওয়া লাগবে। অন্যথায় ফেল বলে গণ্য হবে। বাংলা, ইংরেজি, হিসাববিজ্ঞান ও ম্যানেজমেন্ট এর উত্তর সবাইকেই করতে হবে। আর মার্কেটিং বা ফিন্যান্সের মধ্যে যেকোনো একট যার যেটা ইচ্ছা সে সেটা পূরণ করবে। দুইটি একসাথে করা যাবেনা। আর কেউ মার্কেটিং এর উত্তর করলো, এইচ এস সি তে তার মার্কেটিং সাব্জেক্ট ছিল কি না সেই বিষয় দেখা হবে না। যে যেটা ইচ্ছা উত্তর করবে। তাই এখন থেকেই ঠিক করা উচিত যে আমি কোনটা পূরণ করবো, যেটা পূরণ করবা সেটা এখন থেকেই সেভাবে গুরুত্ব দিয়ে পড়তে হবে। এই ইউনিটে চান্স পেয়ে গেলে কয়েকদিন পরেই মেরিট পজিশন অনুযায়ী বিষয় মনোনয়ন দিয়ে দেওয়া হবে। আলাদা কোনো ভাইবা বা সাক্ষাতকার নেওয়া হয়না।

D Unit: এই ইউনিটের যে কোনো বিভাগের শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিতে পারে। তবে এই ইউনিটের মাধ্যমে চান্স পেলে সে নিজের বিভাগের সাব্জেক্ট এ পড়তে পারবে না। উদাহারণস্বরূপ বিজ্ঞান বিভাগের কেউ যদি এই ইউনিটে পরীক্ষা দিয়ে চান্স পায় তাহলে সে বিজ্ঞানের কোনো সাব্জেক্টে পড়তে পারবে না। তাকে মানবিক বা ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের কোনো সাব্জেক্টে পড়তে হবে। একইভাবে মানবিকের কেউ চান্স পেলে তাকে পড়তে হবে ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের কোনো সাব্জেক্টে আর ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের কেউ চান্স পেলে তাকে পড়তে হবে মানবিক এর কোনো সাব্জেক্টে। এই ইউনিটের  আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে,
এখানে বিজ্ঞান বিভাগের জন্য রয়েছে ১১৪৭ টি সিট
ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের জন্য রয়েছে ৪১০ টি সিট ও
মানবিক বিভাগের জন্য রয়েছে মাত্র ৫৩ টি সিট। সবচেয়ে মজার বিষয় হচ্ছে এই ইউনিটে বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা কম্পিটিশন করে শুধু বিজ্ঞান বিভাগের সাথেই, মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থীরা কম্পিটিশন করে শুধু মানবিক বিভাগের সাথেই আর ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থীরা কম্পিটিশন করে শুধু ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের সাথেই। অর্থাৎ, প্রতিটি বিভাগের জন্য আলাদা ভাবে কম্পিটিশন হয় এই ইউনিটে। এখানেও চান্স পাওয়ার পরে সাক্ষাতকার নেওয়া হবে।

চ ইউনিট: সবাই পরীক্ষা দিতে পারবে। মোট আসন সংখ্যা ১৩৫ টি মাত্র। পরীক্ষা হবে দুইটি ধাপে। অর্থাৎ পরপর দুই সপ্তাহের দুই শনিবারে। প্রথম দিন হবে সাধারণ জ্ঞান পরীক্ষা যেখানে ৫০ টি প্রশ্ন থাকবে প্রতিটি ১ মার্ক করে মোট ৫০ মার্ক। ভুল উত্তরের জন্য কাটা যাবে ০.২৫ মার্ক করে। সেই পরীক্ষা থেকে মাত্র ১৫০০ জন কে সিলেক্ট করা হবে পরের ধাপের জন্য। 
পরের ধাপে হবে অংকন বা ড্রয়িং পরীক্ষা। এর মধ্য থেকে ১৩৫ জনকে সিলেক্ট করা হবে।

IBA: সবাই পরীক্ষা দিতে পারবে। ফর্ম তুলতে হলে এইচ এস সি ও এস এস সি তে দুইটাতেই কম করে জিপিএ ৩.৫ করে রাখতে হবে এ এবং দুইটির যোগফল কমপক্ষে ৭.৫ রাখতে হবে। অর্থাৎ একটি তে কম করে ৩.৫ ও একটি তে কম করে ৪ রাখতে হবে। দুইটি ধাপে পরীক্ষা হবে, একটি হচ্ছে লিখিত - এখানে ইংরেজি, ম্যাথ ও আই কিউ এর ওপরে পরীক্ষা হবে। এরপর হবে ভাইবা।

#Share with your friends.

Comments

Popular posts from this blog

জীবনানন্দ দাশের সৃষ্টিকর্ম মনে রাখার কৌশল।

University Admission Coaching in Khulna.

একটি অনুপ্রেরণার গল্প।